এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১২

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ


উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ

মুক্তিযোদ্ধা:

  • ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮৬-১৯৭১) - সাবেক আইনমন্ত্রী, ভাষা আন্দোলনে 

  • অংশগ্রহণকারী ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ।

  • আকবর হুসাইন (১৯৪২-২০০৬) - মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক খনিজ সম্পদ  মন্ত্রী(১৯৭৮), সাবেক বন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (১৯৯১) এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রী (২০০১)।

  • মমতাজ বেগম - মহিলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর সদস্য।

  • আব্দুল কুদ্দুস মাখন - মুক্তিবাহিনীর সদস্য ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ছাত্রনেতা, 

  • মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন নেতার অন্যতম।

  • শিব নারায়ণ দা - মুজিব বাহিনীর সদস্য।

  • মমতাজ উদ্দিন - মুক্তিবাহিনীর সদ


ধীরেন্দ্রনাথ দত্


 (২ নভেম্বর, ১৮৮৬ - ২১ মার্চ, ১৯৭১) একজন বাঙালি আইনজীবী 


সমাজকর্মী ও রাজনীতিক। তাঁর পরিচিতি মূলত একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে


দেশ বিভাগের আগে ভারতীয় উপমহাদেশের ভারত অংশে এবং পরে পূর্ব 


পাকিস্তানে তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন:

ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের জন্ম তৎকালীন বেঙ্গল প্রদেশের (বর্তমানের বাংলাদেশ)
 ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রামরাইল গ্রামে। তাঁর বাবা জগবন্ধু দত্ত নিজেও 
ছিলেন একজন আইনজীবি, তাই আইনপেশাটি শুরু থেকেই ধীরেন্দ্রনাথের 
কাছে যথেষ্ট পরিচিত ছিলো। ধীরেন্দ্রনাথ পড়াশোনা করেছেন নবীনগর হাই 
স্কুল, কুমিল্লা জিলা স্কুল, এবং কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। তাঁর নাতনী 
অরোমা দত্ত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়বসবাস করেন, এবং তিনি 
বাংলাদেশে মানবতামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত একটি এনজিও-এর 
পরিচালক পদে আসীন। মুনসেফ কোর্টের সেরেস্তাদার জগবন্ধু দত্ত ছিলেন তাঁর 
পিতা। তিনি ১৯০৪ সালে নবীনগর হাই স্কুল হতে প্রবেশিকা, ১৯০৮ সালে
 কলকাতা রিপন কলেজ হতে বি. এ এবং ১৯১০ সালে একই কলেজ হতে 
বি.এল পরীক্ষা পাস করেন। তিনি প্রায় একবছরকাল কুমিল্লার মুরাদনগর 
বাঙ্গুরা উমালোচন হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।
 আইন ব্যবসা করার জন্য ১৯১১ সালে তিনি কুমিল্লা জেলা বারে যোগদান 
করেন। তিনি ১৯০৭ সালে ‘ত্রিপুরা হিতসাধনী সভা’র সেক্রেটারি নির্বাচিত হন 
এবং ১৯১৫ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী
 বিতরণের কাজে অংশগ্রহণ করেন। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ অনুসরণে তিনি 
‘মুক্তি সংঘ’ নামে একটি সমাজকল্যাণমূলক সংস্থা গঠন করেন। কুমিল্লার 
‘অভয় আশ্রম’-এর কর্মকাণ্ডের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন এবং ১৯৩৬ সালে 
ত্রিপুরা (বর্তমানে কুমিল্লা) জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৩ সালের 
দুর্ভিক্ষের সময় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।


ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম:                               

দনা]
সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী এবং ব্যারিস্টার আবদুর রসুলের রাজনৈতিক মতাদর্শ  


 প্রভাবিত হয়ে তিনি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন।
 ১৯১৯ সালে ময়মনসিংহ শহরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্মেলনে 
তিনি অংশগ্রহণ করেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের আহ্বানে তিনি তিন মাসের 
জন্য আইন ব্যবসা স্থগিত রাখেন এবং অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন। 
১৯৩৭ সালে তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গীয় 
প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধন, বঙ্গীয় কৃষিঋণ গ্রহীতা ও বঙ্গীয় মহাজনি আইন 
পাসের সাথে ধীরেন দত্ত সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তিনি ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় 
আন্দোলনে যোগ দেন। ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য তিনি বেশ 
কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে বিভিন্ন কারাগারে বিনাশ্রম ও সশ্রম দণ্ড ভোগ করেন।

]পূর্ব পাকিস্তান পর্ব                                                                                                  

১৯৪৬ সালের নির্বাচনে তিনি কংগ্রেস দলের টিকিটে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার 
সদস্য নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের সংবিধান রচনার জন্য ঐ বছর ডিসেম্বরে 
পূর্ববঙ্গ হতে তিনি পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালের 
পর একজন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিক হিসেবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে 
সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালের ২৫ আগস্ট পাকিস্তান গণপরিষদে 
তিনি অধিবেশনের সকল কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাতেও 
রাখার দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৫৪ সালের জুন মাসে পাকিস্তান গণপরিষদের 
অধিবেশনে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে গভর্নরের শাসন প্রবর্তনের বিরুদ্ধে একটি 
ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৫৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর হতে ১৯৫৮ 
সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত আতাউর রহমান খানের মন্ত্রিসভায় তিনি পূর্ব 
পাকিস্তানের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী ছিলে

মুক্তিযুদ্ধ


পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর ১৯৬০ সালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের 
উপর ‘এবডো’ (Elective Bodies Disqualification Order) প্রয়োগ করা 
হয়। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা
 হয় এবং তখন থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত 
থাকেন। এতদসত্ত্বেও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গুরুত্বপূর্ণ 
বাঙালি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতেন। ১৯৭১ সালের ২৯ 
মার্চ রাতে পুত্র দিলীপকুমার দত্তসহ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে গ্রেফতার করা হয় এবং 
তাঁদেরকে ময়নামতি সেনানিবাসে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।

স্বীকৃতি

[
কুমিল্লা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক, বিশিষ্ট 
পার্লামেন্টারিয়ান ও আইনজীবি হিসেবে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের নামে রাস্তার
নামকরণ হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শহীদ খাজা নিজাম উদ্দিন 
সড়ক পর্যন্ত রাস্তাটি এখন থেকে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত সড়ক নামে পরিচিত হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন