এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

Comilla University( কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)


কুমিল্লা, ০১ জুলাই, ২০১০  :
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিবর্তিত নাম হবে কুমিল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এতে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও গুরুত্ব সংকুচিত হবে। ভিসি বললেন-নাম পরিবর্তন হলেতো আমি-ই জানাবো। হাইপথিটিক্যাল ব্যাপারে আমি ভালোমন্দ মন্তব্য করতে পারিনা। সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার বললেন-আমার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রক্রিয়া গ্রহণ করায় সরকারকে আমি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নেতারা বলেন, যে কোনো মূল্যে আমরা এটা ঠেকাবো। এব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রীর মতামত এক এবং অভিন্ন।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে একটি চিঠি দিয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত নাম কুমিল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে বলে সিন্ডিকেট সদস্য সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি গত সিন্ডিকেট সভাতেও আলোচিত হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদে অনুমোদন সাপেক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় সংসদে কুমিল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরের আইন পাশের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর কুন্ডু গোপী দাস এ বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন সরকার নীতিগত ভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জানান- রূপান্তর হলে তো আমি-ই জানাবো। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হলে এর গুরুত্ব এবং মর্যাদা সংকুচিত হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন হাই পথিটিক্যাল বিষয়ে আমি ভালো মন্দ মন্তব্য করতে পারিনা। ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন-শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এধরনের একটি চিঠি এসেছে জানি। তবে সব কিছু বলতে পারছিনা। এব্যাপারে গতকাল বিকেলে কুমিল্লা-৬ জাতীয় সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার বললে তিনি জানান আমি বিষয়টি জানি না। তবে জাতীয় সংসদে আমার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কার্যকর প্রক্রিয়া গ্রহণ করায় আমি সরকারকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি আমার বক্তব্যে ভিক্টোরিয়া কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি করেছি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক এমপি বেগম রাবেয়া চৌধুরী বলেন এটি দলীয় সংকীর্ণ মানসিকতা ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন কুমিল্লায় একটি নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে পারে। এজন্য সরকার উদ্যোগ নিলে আমরা সহযোগিতা করবো। এদিকে শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন পূর্ণাঙ্গ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিস্তৃত ধারণা। অন্যদিকে রূপান্তরিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি সংকুচিত ধারণা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে কলা, সমাজ বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য অনুষদ গুলোর আর কোনো বিস্তৃতি ঘটবেনা। বরং রুদ্ধ হয়ে যাবে এর প্রসার। পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা হারাবে এটি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা এমদাদুল বারী শাওন, আল-আমীন অর্নব এবং ছাত্রদল নেতা নুরুল আমিন চৌধুরী নোমান বলেন যে কোন মূল্যে আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর প্রতিহত করবো। আমরা কোনো অবস্থাতেই পূর্ণাঙ্গ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্ধাঙ্গ হতে দেবোনা। সকল ছাত্রছাত্রী এ বিষয়ে একমত এবং অভিন্ন।
দীর্ঘ ৫০ বছর কুমিল্লাবাসী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি করে আসছিল। কারণ ৬০ এর দশকে কুমিল্লায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার কথা ছিলো। তখন মরহুম ফজলুল কাদের চৌধুরী সেই সময় তার ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি চট্টগ্রামে নিয়ে যান।
কুমিল্লাবাসীর সে দাবির প্রেক্ষিতে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ২০০১ সালে কুমিল্লাসহ দেশের ১২টি পুরাতন জেলায় ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জাতীয় সংসদ ৪০ নং আইন পাশ করে। সরকার পরিবর্তনের কারণে আওয়ামীলীগ সরকারের সে আইন আলোর মুখ দেখেনি।
বিগত বিএনপিসহ ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় কুমিল্লায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০০৪ সালের ১২এপ্রিল কুমিল্লা জেলা প্রশাসক তারিক-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক সভায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচন করা হয়। লালমাই মৌজার সালমানপুরে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। একই বছরের ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় তা অনুমোদন লাভ করে। ২০০৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। একই বছরের ৮মে জাতীয় সংসদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পাশ করা হয়। ২৮মে থেকে আইনটি কার্যকর হয়। ২৯মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়। একই গেজেটে ২০০১ সালের কুমিল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ নং আইন বিলুপ্ত করা হয়। শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ৩২কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি বিষয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি শুরু হয়। এপর্যন্ত ৪টি সেশনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। প্রায় ২হাজার ছাত্রছাত্রী বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।রয়েছে

1 টি মন্তব্য: